পয়গামে সুলেহ্‌ (শান্তির বার্তা)

হযরত মির্যা গোলাম আহ্‌মদ - প্রতিশ্রুত মসীহ্ ও ইমাম মাহ্‌দী (আ.)-এর লিখিত পুস্তকাবলী

আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের পবিত্র প্রতিষ্ঠাতা প্রতিশ্রুত ও ইমাম মাহদী হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আ. ) ১৯০৮ সালে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। তাঁর মৃত্যুর দু’দিন পূর্বে তিনি পয়গামে সুলেহ্ (শান্তির বার্তা) নামক এ পুস্তিকাটি উর্দুতে লেখেন । এটাই তাঁর জীবনের শেষ লেখা। তাঁর সময়ে তৎকালীন বৃটিশ ভারতবর্ষে হিন্দু ও মুসলমানের মাঝে সাম্প্রদায়িক বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছে ছিল। এ বিরোধের আজো অবসান হয় নি। প্রায় প্রতি বছর এ উপমহাদেশের কোথাও না কোথাও হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা-হাঙ্গামার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এহেন অবস্থায় হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক কলহ দূর করার জন্য হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আ. ) তাঁর এ পুস্তিকায় অবিভক্ত
ভারতবর্ষের এ দুটো জাতির মাঝে শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে সন্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, কারো স্বীকৃত পয়গম্বর ও ঐশী ধর্ম গ্রন্থের প্রতি নিন্দা ও মিথ্যারোপ করে আক্রমণ করাটাই সন্ধির পথে বাঁধা। তিনি বলেন, আমরা কখনো অন্য জাতির দুর্নাম করি না

কেননা যদি তাঁরা খোদার পক্ষ থেকে না হতেন তবে কোটি কোটি লোকের হৃদয় তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হতো না। এরই ভিত্তিতে আমরা বেদকেও খোদার পক্ষ থেকে অবর্তীর্ণ বলে বিশ্বাস করি এবং তাঁর ঋষিদেরকে সম্মানিত ও পবিত্র মনে করি। তদ্রুপ শান্তি স্থাপনের জন্য তিনি আমাদের নবী (সা.) -কে খোদার সত্য নবী বলে মেনে নিতে এবং ভবিষ্যতে তাঁর অবমাননা করা ও তাঁকে মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করা থেকে বিরত থাকতে হিন্দু ও আর্য সমাজীগনকে আহবান জানান। হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যকার শত্রুতা ও বিদ্বেষের মূল কারণ ধর্মীয় ঝগড়া এবং এটা রাজনৈতিক ঝগড়া নয় বলে তিনি বিশ্বাস করতেন । তাই তিনি বলেছেন, ‘হে মুসলমানগণ ! আপনাদের ও হিন্দুদের মধ্যে শত্রুতা বিদ্বেষ কেবল তখন দূর হতে পারে যখন আপনারা বেদ ও বেদে ঋষিদেরকে সরল অন্তঃকরণে খোদার পক্ষ থেকে এসেছেন বলে স্বীকার করে নিবেন। তেমনিভাবে হিন্দুগণও আমাদের নবী (সা.)-এর নবুওয়তকে সত্য বলে স্বীকার করে নিবেন। এমনটি হলেই ভারতবর্ষে হিন্দু-মুসলিম বিরোধ চিরকালের জন্য তিরোহিত হয়ে যাবে।