সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
আহ্মদীয়া মুসলিম জামা’তের প্রধানের সাথে সাক্ষাত করলেন সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী
প্রতিশ্রুত মসীহ্ ও ইমাম মাহ্দী (আ:) আবির্ভূত হয়েছেন!

আহ্মদীয়া মুসলিম জামাতের পক্ষ থেকে সবাইকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও সালাম। একটি ঐশী নেয়ামতের সংবাদ সবার কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কয়েকটি কথা বিনীতভাবে উপস্থাপন করছি।
অন্যান্য সব মুসলমানের মত আমরাও হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম-এর উম্মত হিসাবে ইমাম মাহ্দী ও প্রতিশ্রুত মসীহ্ (আ.)-এর আগমনের প্রতীক্ষায় ছিলাম। আজ থেকে শতাধিক বছর আগে ১৮৮৯ খৃষ্টাব্দে তথা ১৩০৬ হিজরী সনে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের এক নিভৃত গ্রামে হযরত মির্যা গোলাম আহ্মদ (আ.) সেই প্রতিশ্রুত মহাপুরুষ হবার দাবী করেন। আমরা পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে তাঁকে যাঁচাই করে সত্য মাহ্দী ও প্রতিশ্রুত মসীহ্ হিসাবে গ্রহণের তৌফিক লাভ করেছি। কুরআনের ভবিষ্যদ্বাণী ও সহীহ্ হাদীসের আলোকে একথা সুস্পষ্ট, খাতামান্নাবীঈন (সা.)-এর আধ্যাত্মিক কল্যাণে ও তাঁর আনুগত্যে তাঁরই উম্মত হতে ইমাম মাহ্দী ও প্রতিশ্রুত মসীহ্‘র চতুর্দশ শতাব্দীর শিরোভাগে আগমনের কথা। হযরত মির্যা সাহেব তদনুযায়ী সঠিক সময়ে আগমন করেছেন।
মহানবী (সা.) বলেছেন:
ইমাম মাহ্দী আবির্ভূত হবার সংবাদ পাওয়া মাত্রই তাঁর হাতে বয়আত করিও, যদি বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়েও যেতে হয়; কেননা নিশ্চয় তিনি আল্লাহ্র খলীফা আল-মাহ্দী।
(সুনানে ইবনে মাজা-বাবু খুরূজুল মাহ্দী)
বয়’আতের তাৎপর্য ও শর্তসমূহ

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী প্রতিশ্রুত মসীহ্ ও মাহ্দীর আগমনের কথা। হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)-এর নির্দেশ রয়েছে তার হাতে বয়াত করার। মহানবী (সা.) বলেছেন,
“ফা ইযা রাআয়তুমূহু ফা বা’য়েউহু ওয়া লাও হাবওয়ান আলাস সালজে ফা ইন্নাহু খালীফাতুল্লাহিল মাহ্দী”।
অর্থাৎ যখন তোমরা তাঁর সন্ধান পাবে তখন তাঁর হাতে বয়াত গ্রহণ করবে যদি বরফের পাহাড় হামাগুড়ী দিয়েও ডিঙিয়ে যেতে হয়, কেননা তিনি আল্লাহ্র খলীফা আল্-মাহ্দী।
(ইবনে মাজাহ, বাব-খরূজুল মাহ্দী)
মসীহ্ ও মাহ্দীর সত্যতা কারো কাছে প্রকাশিত হয়ে থাকলে কাল বিলম্ব না করে হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)-এর নির্দেশ অনুযায়ী তাঁর হাতে বয়াত গ্রহন করা উচিত।
ঈসা (আ:)-এর মৃত্যু

ঈসা (আ:)-এর মৃত্যু সম্বন্ধে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। যথা:-
-
১। ইহুদীদের বিশ্বাস: ইহুদীদের বিশ্বাস এই যে, ঈসা (আ:) নবুওয়তের মিথ্যা দাবীদার ছিলেন। এ জন্য তৌরাতের ব্যবস্থা (দ্বিতীয় বিবরণ - ২১:২৩ দ্রষ্টব্য) অনুযায়ী তাঁকে শূলে দিয়ে অভিশপ্ত করে বধ করা হয়েছে।
-
২। খ্রীস্টানদের বিশ্বাস: খ্রীস্টানরা বিশ্বাস করে যে, ঈসা (আ:) খোদার পুত্র ছিলেন। তিনি পাপী মানব জাতির পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য শূলে অভিশপ্ত মৃত্যুবরণ করে তিন দিন পর পুনরায় জীবিত হয়ে আকাশে উঠে খোদার দক্ষিণ পার্শ্বে বসে আছেন।
(ইব্রীয়-৯:২৭-২৮, মার্ক-১৬:১৯ দ্রষ্টব্য)
-
৩। অ-আহ্মদীদের বিশ্বাস: গয়ের আহ্মদীদের বিশ্বাস এই যে, ঈসা (আ:) আল্লাহ্র এক নবী ছিলেন। তাঁকে ইহুদীগণ শূলে দিয়ে বধ করতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আল্লাহ্ তাঁকে উঠিয়ে চতুর্থ আকাশে নিজের কাছে নিয়ে গিয়েছেন, আর ঈসা (আ:)-এর আকৃতি বিশিষ্ট অন্য এক ব্যক্তিকে শূলে দিয়ে বধ করেছে।
-
৪। আহ্মদীদের বিশ্বাস: আহ্মদীগণ বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ্র নবী ঈসা (আ:) কে ইহুদীরা অভিশপ্ত করে বধ করবার জন্য শূলে দিয়েছিল। কিন্তু তিনি শূলে প্রাণত্যাগ করেন নি। শিষ্যদের চেষ্টা মুর্ছিত অবস্থায় শূল থেকে নামবার পর বহু বৎসর জীবিত থেকে তিনি স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন।
পবিত্র কুরআনের ত্রিশটি আয়াতের আলোকে ঈসা (আঃ)-এর মৃত্যুর প্রমাণ
- (html) - (pdf)খাতামান্নাবীঈন
আহ্মদীয়া
মুসলিম জামাতের বিরুদ্ধবাদী আলেমগণ হরহামেশাই এ অভিযোগ করে
চলছেন আহ্মদীরা সরদারে দু’আলম হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু
আলায়হে ওয়া সাল্লামের ‘খতমে নবুওয়তে’ অর্থাৎ তাঁকে ‘খাতামান্নাবীঈন’
রূপে বিশ্বাস করে না। এ অভিযোগটি একটা নির্জলা মিথ্যা। আহ্মদীয়া
জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম মাহ্দী ও মসীহ্ মাউদ হযরত মির্জা
গোলাম আহ্মদ (আ.) বলেন,
“যে পাঁচতি স্তম্ভের ওপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত তা-ই আমার ধর্ম বিশ্বাস। আমরা এ কথার উপর ইমান রাখি, খোদাতায়ালা ব্যতীত কোন মাবুদ নেই এবং সাইয়্যেদেনা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইয়ে ওয়া সাল্লাম তাঁর রসুল এবং খাতামান্নাবীঈন”।
হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইয়ে ওয়া সাল্লাম এর খাতামান্নাবীঈন হওয়া সম্পর্কে তিনি (আ.) এক হৃদয়গ্রাহী দর্শন পেশ করে বলেন,
‘আমাদের খোদা এক জীবন্ত খোদা, আমাদের কিতাব একটি জীবন্ত কিতাব এবং আমাদের রসূল হযরত খাতামান্নাবীঈন মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.) একজন জীবিত রসূল’।
ইমাম মাহ্দী (আ:)-এর সত্যতা
আহ্মদীয়া
জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহ্মদ (আ.) দাবী করেছেন
যে, আল্লাহ্ তা’আলা তাকে ইমাম মাহ্দী ও মসীহ্ মাওউদ হিসেবে
প্রেরণ করেছেন। বিগত ১৮৮৯ খৃস্টাব্দে তথা ১৩০৬ হিজরী হতে একশত
বছর ধরে আহ্মদীয়া জামা’ত ইসলামের শ্বাশত বাণী প্রচার করে
চলেছে। ইতিমধ্যে এই আধ্যাত্মিক সংগঠন পৃথিবীর শতাধিক দেশে
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শত বাধা-বিপত্তি সত্বেও আল্লাহ্ তা’আলার
বিশেষ অনুগ্রহে এই সংগঠন সাফল্যের পর সাফল্য অর্জন করে বিশ্বব্যাপী
ইসলাম ভিত্তিক ‘উম্মতে ওয়াহেদা’ প্রতিষ্ঠার লক্ষে নিরবিচ্ছিন্নভাবে
প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে। অনেকে প্রশ্ন করেন যে, আহ্মদীয়া
জামাতের প্রতিষ্ঠাতার দাবীর সত্যতার প্রমান কি?
আহ্মদীয়া মুসলিম জামাতের ধর্মবিশ্বাস
ইসলামের মৌলিক বিষয়ে অন্যান্য সুন্নী মুসলমানদের বিশ্বাস আর আমাদের বিশ্বাস এক ও অভিন্ন। এ প্রসঙ্গে আহ্মদীয়া মুসলিম জামাতের পবিত্র প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আ.)-এর লেখার একটি অংশ উদ্ধৃত করছি। তিনি বলেনঃ
“আমরা ঈমান রাখি, খোদা তা‘লা ব্যতীত কোন মা‘বূদ নাই এবং সৈয়্যদনা হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্র রসূল এবং খাতামুল আম্বিয়া। আমরা ঈমান রাখি, কুরআন শরীফে আল্লাহ্ তা‘আলা যা বলেছেন এবং আমাদের নবী (সা.)-এর পক্ষ থেকে যা বর্ণিত হয়েছে উল্লিখিত বর্ণনানুসারে তা সবই সত্য। আমরা এ-ও ঈমান রাখি, যে ব্যক্তি এই ইসলামী শরীয়ত থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হয় অথবা যে বিষয়গুলি অবশ্যকরণীয় বলে নির্ধারিত তা পরিত্যাগ করে এবং অবৈধ বস্তুকে বৈধকরণের ভিত্তি স্থাপন করে, সে ব্যক্তি বে-ঈমান এবং ইসলাম বিরোধী। আমি আমার জামা‘তকে উপদেশ দিচ্ছি, তারা যেন বিশুদ্ধ অন্তরে পবিত্র কলেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্’-এর উপর ঈমান রাখে এবং এই ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করে। কুরআন শরীফ হতে যাদের সত্যতা প্রমাণিত, এমন সকল নবী (আলাইহিমুস সালাম) এবং কিতাবের প্রতি ঈমান আনবে। নামায, রোযা, হজ্জ ও যাকাত এবং এতদ্ব্যতীত খোদা তা‘লা এবং তাঁর রসূল (সা.) কর্তৃক নির্ধারিত কর্তব্যসমূকে প্রকৃতপক্ষে অবশ্য-করণীয় মনে করে যাবতীয় নিষিদ্ধ বিষয়সমূহকে নিষিদ্ধ মনে করে সঠিকভাবে ইসলাম ধর্ম পালন করবে। মোট কথা, যে সমস্ত বিষয়ে আকিদা ও আমল হিসেবে পূর্ববর্তী বুজুর্গানের ‘ইজমা’ অর্থাৎ সর্ববাদী-সম্মত মত ছিল এবং যে সমস্ত বিষয়কে আহলে সুন্নত জামা’তের সর্বাদি-সম্মত মতে ইসলাম নাম দেয়া হয়েছে, তা সর্বতোভাবে মান্য করা অবশ্য কর্তব্য। যে ব্যক্তি উপরোক্ত ধর্মমতের বিরুদ্ধে কোন দোষ আমাদের প্রতি আরোপ করে, সে তাকওয়া বা খোদা-ভীতি এবং সততা বিসর্জন দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ রটনা করে। কিয়ামতের দিন তার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ থাকবে, কবে সে আমাদের বুক চিরে দেখেছিল, আমাদের এই অঙ্গীকার সত্বেও অন্তরে আমরা এসবের বিরুদ্ধে ছিলাম”?
“আলা ইন্না লা’নাতাল্লাহে আলাল কাযেবীনা ওয়াল মুফতারিয়ীনা” অর্থ্যাৎ - সাবধান! নিশ্চয় মিথ্যাবাদী ও মিথ্যারোপকারীদিগের ওপর আল্লাহ্র অভিসম্পাৎ।
(আইয়ামুস্সুলেহ্ পুস্তক, পৃষ্ঠা: ৮৬-৮৭)